নিজস্ব প্রতিবেদক: রাঙামাটি পার্বত্য জেলার নানিয়ারচর উপজেলাধীন সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের রাঙামাটি সড়ক বিভাগাধীন বগাছড়ি-নানিয়ারচর-লংগদু জেলা মহাসড়ক (জেড-১৬১২)-এর ১০ম কিলোমিটারে নির্মিত নানিয়ারচর সেতুটির নাম চিত্রশিল্পী “বাবু চুনিলাল দেওয়ান সেতু” নামে নামকরণের নিমিত্তে গত ০৩ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে সরকার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। উক্ত প্রজ্ঞাপনটি দেখে পার্বত্যবাসী অত্যন্ত ব্যাথিত ও মর্মাহত হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তরা, সরকারের কাছে পার্বত্য এলাকার আপামর জনতার আবেগ অনুভূতি ও মুক্তিযোদ্ধার প্রতি সম্মানের মূল্যায়ন করে উক্ত প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করার জোর দাবি জানান।
কারণ উক্ত সেতুটির পাশে ঘুমিয়ে আছেন বাংলা মায়ের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ।
তার সম্মানে উক্ত সেতুটি “বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ সেতু” নামে নামকরণ করার জন্য পার্বত্যবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলো। কিন্তু সাধারণ পার্বত্যবাসীর দাবিকে পাশ কাটিয়ে সেতুটি অন্য নামে নামকরণ করা হলো। এতে পার্বত্য এলাকার ছাত্র সমাজ ও সাধারণ জনগণ খুবই মর্মাহত হয়েছে।
মুন্সি আব্দুর রউফ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব “বীর শ্রেষ্ঠ” উপাধিতে ভূষিত করা হয় তিনি তাঁদের অন্যতম।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি নিয়মিত পদাতিক সৈন্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে ১৯৭১ সালের ৮ এপ্রিল (মতান্তরে ২০ এপ্রিল) তিনি মর্টার শেলের আঘাতে শহীদ হন। তাঁকে রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে একটি টিলার ওপর সমাহিত করা হয়।
যে নানিয়ারচর এর মাটিতে এই বীরশ্রেষ্ঠ শায়িত রয়েছেন সেই মাটির উপরে একটি সেতুর নামকরণ করা হচ্ছে অন্য নামে যা আমরা রাঙামাটিবাসী তথা পার্বত্যবাসী মেনে নিতে পারছি না।
তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার পক্ষ হতে সেতুটির নাম পরিবর্তন করে “বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ সেতু” নামে পুনরায় নামকরণ করার দাবি জানাচ্ছি।